ন্যায্য দাবীতে আন্দোলনরত বাংলাদেশের সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের ওপর স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের আক্রমণকে ধিক্কার
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে আওয়ামী লীগের যে ভূমিকা ছিল, তার থেকে অনেক বেশী ভূমিকা ছিল পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টি , পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টি(এম-এল)'এর মত বিপ্লবী দলগুলোর । এমনকি পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টি (এম-এল) প্রথমে জাতীয় মুক্তি সংগ্রামের বিরোধিতা করলেও পরে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধকে সমর্থন করেছিল । এইসব বিপ্লবী দলগুলো পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও রাজাকার, আল-বদর বাহিনীর সঙ্গে মরণপণ লড়াই করেছিল । বরিশাল, পাবনা, যশোর সহ আরও নানা জায়গার যুদ্ধ তার প্রমাণ।
এই কমিউনিস্ট বিপ্লবী সংগঠনগুলোর লড়াইয়ের ফলেই স্বাধীন, নয়াগণতান্ত্রিক বাংলাদেশের জন্ম হত। হয়ত কয়েক বছর দেরী হত।
দক্ষিণ এশিয়ায় সাচ্চা কমিউনিস্টদের ক্ষমতা দখলের সম্ভাবনায় ভীত হয়েই সোভিয়েত সামাজিক সাম্রাজ্যবাদ, তার দালাল ভারতীয় সম্প্রসারণবাদকে ব্যবহার করে, আওয়ামী লীগকে সামনে রেখে পূর্ব বাংলার তথাকথিত এই 'স্বাধীনতা'র জন্ম দেয় । 'বাংলাদেশ' নামটার ও জন্ম হয় । আসলে বিপ্লবীরা স্বাধীন 'পূর্ব বাংলা' রাষ্ট্রের জন্য লড়াই করেছিলেন। তার বদলে এল আধা-ঔপনিবেশিক বাংলাদেশ।
তার পরেই এল মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে চরম স্বৈরাচারী বাকশাল শাসন । সংশোধনবাদী কমিউনিস্ট পার্টি অফ বাংলাদেশ (সিপিবি) যার অন্যতম শরিক ছিল। অসংখ্য বিরোধীদের হত্যা করা হয়েছিল । যার মধ্যে কমরেড সিরাজ শিকদার ও কমরেড মনিরুজ্জামান তারা অন্যতম।
আর তারপর আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের স্বঘোষিত ঠিকাদার হয়ে গেল। আর যারা আওয়ামী লীগ বিরোধী তারা সকলেই 'রাজাকার'।
পরবর্তীকালে স্বাধীনতা বিরোধী, ইসলামি মৌলবাদী জামাত-এ-ইসলামীর পুনরায় উত্থান ও বিএনপি-র তাকে মদত দেওয়ার ফলে আওয়ামী লীগের কাজটা সহজ হয়ে গেল।
আর বিভিন্ন দলের সরকারের আমলে, সেনা শাসনের আমলে, বিপ্লবী শক্তির ওপর রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন অবাধে চলতে লাগল। কমরেড মোফককার চৌধুরী, কমরেড মিজানুর রহমান টুটু সহ হাজার হাজার বিপ্লবীর শহীদ হওয়া তার প্রমাণ।
আজও বৈষম্যমূলক কোটার বিরুদ্ধে যে সব ছাত্রছাত্রীরা লড়ছে তাদের রাজাকার বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে । তবে এর পাল্টা "আমরা সবাই রাজাকার" স্লোগান দিয়ে ছাত্ররা একটা ভুল করে ফেলেছে। এর ফলে তাদের 'মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী' তকমা দিয়ে তাদের ওপর হামলা চালানো সহজ হয়ে গেল। যেমন গতকাল ছাত্র লীগের গুন্ডা ও পুলিশ দিয়ে আক্রমণ করানো হয়েছে। 'আমরা সবাই রাজাকার' কথাটা যে ছাত্রদের রাজাকার চিহ্নিত করে শেখ হাসিনার মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাঙ্গ করে দেওয়া হয়েছে তা অনেক মানুষই সহজে বুঝবেন না।
বরং ছাত্রছাত্রীদের এখন স্লোগান দেওয়া উচিত, ঘোষণা করা উচিত, যে তারাই আসল মুক্তিযোদ্ধা। আর আওয়ামী লীগ, ছাত্র লীগ হলো রাজাকার।
Comments
Post a Comment