তালিবানের সাময়িক জয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় মুসলিম নামধারী কিছু মানুষের উল্লাস দেখে অনেকে মনে করছেন যে ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশের অধিকাংশ মুসলমান হয়ত তালিবানের কট্টরপন্থী ইসলামে বিশ্বাস করেন । তাকে সমর্থন করেন ।
এর থেকে বেশী ভুল ধারণা আর কিছু হতে পারে না ।
উপমহাদেশের অধিকাংশ ইসলাম ধর্মালম্বী মানুষই উদারবাদী , নরমপন্থী সুফি ইসলামি ভাবধারায় বিশ্বাস করেন ।
তালিবান, আইসিস, আল কায়েদা ইত্যাদি সন্ত্রাসবাদী সংগঠন অন্য ধর্মের মানুষের যত না অত্যাচার করে তার থেকে অনেক বেশী আক্রমণ নামিয়ে আনে সুফি ভাবধারায় বিশ্বাসী মানুষের ওপর ।
উপমহাদেশের অধিকাংশ ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষও এই সব কট্টরপন্থীদের ঘৃণা ছাড়া আর কিছু করেন না ।
২০১৭ সালে পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশে বিখ্যাত সুফি পীর লাল শাহবাজ কলন্দরের দরগায় আইসিস'এর বোমা বিস্ফোরণে ৯০ জনেরও বেশী মানুষ মারা যাওয়ার পর সারা পাকিস্তান জুড়ে যে রকম গণবিক্ষোভ দেখা গিয়েছিল তা এর প্রমাণ । সেই কারণেই এত দিন ধরে সক্রিয় থেকেও তেহরিক-এ-তালিবান (পাকিস্তানি তালিবান) পাকিস্তানের দু একটা পকেট ছাড়া কোথাও জনভিত্তি তৈরী করতে পারেনি ।
ইদানিং সৌদি আরব এবং কাতারের টাকায় পুষ্ট হয়ে ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করে কিছু কম বয়েসি মুসলিম পুরুষকে ওয়াহাবি এবং আহলে হাদিস ভাবধারার দিকে ওরা আকর্ষণ করতে পেরেছে ঠিকই , কিন্তু তা মোট মুসলিম জনসংখ্যার একটা ক্ষুদ্র অংশ ।
যেহেতু এরা সোশ্যাল মিডিয়ায় খুব সক্রিয় তাই ফেসবুক ইত্যাদি দেখে মনে হয় মুসলিমদের মধ্যে এরাই বোধহয় সংখ্যাগরিষ্ঠ । বাস্তবের মাটিতে এরা নগণ্য । ইসলামিক মৌলিবাদ কাগজের বাঘ ।
বরং ভারতে হিন্দু মৌলবাদী - ফ্যাসিস্ট আরএসএস-বিজেপি'র জনভিত্তি অনেক বেশী শক্তপোক্ত ।
তাই মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ এবং তালিবানের বিরুদ্ধে আফগানিস্তানের গণতান্ত্রিক ও বিপ্লবী শক্তির সংগ্রামকে সংহতি জানানোর পাশাপাশি ভারতবর্ষে তালিবানের দোসর সংঘ পরিবারের বিরুদ্ধেও মরণপণ লড়াই চালিয়ে যেতে হবে ।
Comments
Post a Comment